Followers

Saturday 28 April 2018

সড়ক দূর্ঘটনা ও প্রাসঙ্গিক ভাবনা এবং বর্তমান অবস্থা

সড়ক দূর্ঘটনা ও প্রাসঙ্গিক ভাবনা এবং বর্তমান অবস্থা

হামিম হোসেন মণ্ডল (বুলবুল)



    সড়ক দূর্ঘটনা, বাস তথা যান দূর্ঘটনা নতুন বিষয় নয়। শরীর থাকলে যেমন অসুস্থতা আসবেই কোনো না-কোনো সময়, যানবাহন ব্যবহার করলে তেমন খারাপ হবে, দূর্ঘটনাও ঘটবে। - এমনটাই দেখে আসছি। নয় কি?
            অথচ, প্রতিনিয়ত কিছু সাবধানতা মেনে চললে বড় (জটিল, ঘনঘন) অসুস্থতা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব তেমনি অনেক বড়বড় বা ঘনঘন দূর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব। লক্ষ্য করবেন – সাবধানতা অবলম্বন করতে করতে কোনো সময় অসতর্কতা এসে গেলে ঘটে বিপত্তি। সুতরাং, মুহুর্তের জন্যও সতর্কতা বিচ্যূতি ঘটা যাবে না, বিশেষ ক্ষেত্রে তো নয়ই।
            নতুন ইংরেজি বছর পড়তে না-পড়তেই একাধিক মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনা ঘটে চলেছে রাজ্যে। ঘটে চলেছে বললাম, কারণ এই নিবন্ধটি খসড়া লেখার পরেও সুতিতে পথ দূর্ঘটনায় মৃত্যু হল এক বাইক আরোহীর-এমন অনেক খবরই পেলাম বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে। তবে অধিকাংশই যেন মুর্শিদাবাদে ঘটা। এপর্যন্ত বছরের বড় মর্মান্তিক দূর্ঘটনাটি ঘটে ২৯ জানুয়ারি জেলার দৌলতাবাদে বালিরঘাট এলাকায়। গোটাএকটি সরকারি বাস যাত্রীসমেত ভৈরবের গভীর পানিতে ঝাপিয়ে পড়ে ৪৩-এর অধিক প্রাণ অকালে তলিয়ে (খোয়া) গেল। এর কিছুদিন আগে জেলার বেলডাঙ্গার বেগুনবাড়ি এলাকায় নয়নজুলি গর্তে পড়ে (বাস দূর্ঘটনা) শিশুসহ ১০/১২টা প্রাণ যায়। তবুও, যান তথা সড়ক দূর্ঘটনা থামেনি! কখনো লরি-বাইক, লরি-টুকটুক, চিংড়িহাটা বাস দূর্ঘটনা, প্রভৃতি সংঘর্ষ চলছেই। সেভ ড্রাইভ, সেভ লাইফ প্রকল্প (অনুষ্ঠান) এর পরেও খবর আসছে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট এসআইযদিও তুলনামূলক ভাবে মোটর-বাইক দৌরত্ব বেশ কমেছে।
            প্রসঙ্গতঃ, কলম (০২ ফেব্রুয়ারি) অভিমতে (দূর্ঘটনা রোধে সেই সচেতনতা কোথায়?) হক সাহেব লেখেন, মুর্শিদাবাদের দৌলতাবাদে বাস দূর্ঘটনা থেকে শিক্ষা নিতে হবে পরিবহণ দফতর, বাসচালক ও মালিক, সাধারণ মানুষ ও পুলিশ-প্রশাসনের দারিত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিবৃন্দেরএখন বিযয় হল – যা (ঘটনা বা বিযয়) থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা যায় তা বেশি বেশি হোক, দেখতে চাই ও অন্যদের দেখার পরামর্শ দিই। ধরুন – ইসলামি জালসা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা যায়, তাই প্রতি তা হোক, শুনি ও অন্যরা শুনুক তাই চাই। পত্রদাতা দূর্ঘটনা থেকে শিক্ষা নিতে পরামর্শ দিয়েছেন সবাইকে। তবেকি দূর্ঘটনা যত ঘটবে শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ তত বাড়বে? দূর্ঘটনা থেকে শিক্ষা কেন নিতে হবে? মানুষ কি এতোই পিছিয়ে পড়েছে হঠাৎ! বাসচালক, পুলিশ-প্রশাসন কি যথাযথ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নয়? যথাযথ প্রশিক্ষণ নিয়ে উপযুক্তরা বাসচালক কিংবা পুলিশ-প্রশাসনের সদস্য হন। প্রবাদ আছে – চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে। - সেই বুদ্ধি কি কোনো কাজে লাগে? লাগে না। আগুনে হাত দিলে জালা করে – এটা সবাই জানে, সদ্যজাত বা নিতান্ত শিশু বাদে। এখন যদি আগুনে হাত দিয়ে শিখতে বা জানতে চান, তবে শিক্ষা এগুবে কিকরে!

           

দৌলতাবাদে বাস দূর্ঘটনায় প্রধানত চালকের মোবাইলকে দায়ি করা হয়েছে। কখনো কখনো শিতের কুয়াশার বিষয় উঠে এসেছে। দূর্ঘটনাটি গবেষণা করে –
মোবাইল কানে ড্রাইভ নিশিদ্ধ হয়েছে। মনে হতেপারে যেন মোবাইল-ই দায়ি। আসলে দায়িত্ব চালকের। এটা তো সাবধানতা! বেশ কিছু মানুষের মস্তিষ্ক আসলে এতটাই অপরিণত (বলে মনে হয়) – গাড়ি, মোবাইলকে খেলনা ভেবে বসে। আমেরিকায় বন্দুক যেন খেলনায় পরিণত হয়েছে, আমেরিকায় ফের স্কুলে বন্দুকধারী ছাত্রের গুলী – এমনটাই বোঝায়।
            প্রকৃতপক্ষে, কখন, কোথায়, কোন্ জিনিস, কতটা ব্যবহার করতে হয়/হবে অথবা হয়না/হবেনা – বুঝতে হবে পরিণত সুস্থ মস্তিষ্কে। আপনার উপর পাথর ছুড়ে পাথরের দায় দিলে তো চলবে না।
            তবে সাবধানতার পরেও দূর্ঘটনা ঘটলে সাধারণত এতো মারাত্মক আকার নেয় না অথবা এতো ঘনঘন সংগঠিত হয় না। কোনো মর্মান্তিক দূর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে দেখবেন – কোনো গাফিলতি, অসতর্কতা, অসাবধানতা-ই উঠে আসবে/আসে। ছোট ছোট দূর্ঘটনার দিকে দেখুন – জানবেন সাবধানতা ও সতর্কতার জন্য মারাত্মক দূর্ঘটনার থেকে রেহায় মিলেছে।
            মনে রাখবেন – মানুষে তথা জীবজগতের বেঁচে থাকাটাই আশ্চর্যের। তাই বেঁচে থাকতে হলে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম চালাতে হয়, জীবনসংগ্রাম। দূর্ঘটনা থেকে বাঁচতেও প্রতিনিয়ত সতর্কতা ও সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। কথায় আছে – সাবধানতার মার নেইঅন্যথায় জীবন সংকটাপন্ন।
            অনেক সময় অনেক জায়গায় জীর্ণ কিংবা সংকীর্ণ রাস্তা ও কমজোর সেতু দূর্ঘটনার উল্লেখযোগ্য কারণ হয়ে দাঁড়ায়। মুর্শিদাবাদ জেলায় দূর্ঘটনা সম্ভাবনা এমন প্রায় অনেকগুলি রাস্তা ছিল এবং সেতুর সংখ্যা বর্তমান। বহরমপুরে বহুল ব্যবহৃত রামেন্দ্র সুন্দর সেতু ওরফে রাধার ব্রীজটি ভালো নেই, হরিহরপাড়া ও পিঁপড়াখালি সেতুটি দূর্ঘটনার ভয় দেখায়। ইত্যাদি ইত্যাদি আরও রয়েছে। কথায় রয়েছে – দূর্ঘটনার হাত-পা নেয়। দূর্ঘটনা ও ভয় কাটাতে এগুলো নিরাপদ রাখা একান্ত প্রয়োজন।
            আমার যাত্রা পথে প্রাসঙ্গিক অনেক ঘটনার মধ্যে দুএকটি বলছি শুনুন। কিছুমাস আগে একদিনের ঘটনা। বহরমপুরে যাবো, ত্রিমোহিনী মোড়ে বাসে উঠি। আসন না মেলায় অগত্যা কেবিনে একটু ঠেসাঠেসি করে বসতে হল। বাস চলল, এসময় চালক ও পাশে বসা এক যাত্রীর কথোপোকথনের মাঝে চালক বলল, এই বাসটি ভালো নয়, স্টেয়ারিং ঠিকঠাক নিজের মতে ঘোরে না, সমস্যা হয়, আমি বলে চালাচ্ছি, অন্য কেউ চালাবে না, ইত্যাদি ইত্যাদি। সেদিন চালকের কথাগুলি মনে ধরেছিল (বাহাদুর চালক হিসেবে), কিন্তু গাড়ি ও চালককে মনে রাখা হয়নি (মস্তিষ্কের অবস্থান ছিল - এটা কোনো বিষয় নয়)। - এটা কি চালকের বাহাদুরি? এক্ষেত্রে দূর্ঘটনা না-ঘটাটাই অস্বাভাবিক নয় কি? হয়তো চলকদের দক্ষতার জন্য তা স্বাভাবিক হয়ে যায়!
            অন্য একদিন, সম্প্রতি, বহরমপুর থেকে ফিরছি, গন্তব্যস্থাল ঝাউবনা মোড়। গাড়িটিতে সিটের পেছনে ক্রমিক নম্বর নেই, আছে জানালার পাশে গায়ে, লব/হর আকারে। এক্ষেত্রে কোন্ নম্বরটা (লব/হর) জানালার পাশে – বচসার সুযোগ থাকে। এজন্যই কি সিটের পাছনে সিট নম্বর রাখেনা কিছু বাস? এটা বাস্তব। দুএকটি স্টপেজ নিতেই ভিরে ঠেসাঠেসি, দরজা বন্ধ রাখার উপায় থাকছেনা এমন। এর মধ্যে থেকে কেউ (যাত্রী) তেজ দেখিয়ে বলে উঠল, বাসে চড়লে ঠেলাঠেলি, গুতাগুতি, ধাক্কাধাক্কি, কষ্ট হবেই; তা নাহলে ব্যক্তিগত গাড়িতে যেতে হবে। প্রশ্ন হল – বাস তথা যান সফরে গন্তব্যস্থানে পৌঁছোনটাই কি মূল লক্ষ্য? নাকি আদবের সহিত সুস্থ শরীরে পৌঁছোনটা? – এমন গাড়িতো সাধারণত দূর্ঘটনা সম্ভাবনা! নয় কি? – সুতরাং, গাড়িতে যাত্রীভিড় নিয়ন্ত্রণ ও সুস্থ যাত্রার বিষয়টি গুরুত্ব পাওয়া উচিত। বাসটি সারগাছি মোড় সংলগ্ন আসতেই বন্ধ হয়ে পড়ে। নাকি বাসে কিছু সমস্যা ঘটেছে। কিছু টাইট দিতে হবে, রেঞ্জ খুঁজে মিলছে না, আবশেষে কোনো এক অবস্থানে মিলল। এমন সময় এক যাত্রী জানাল, সকালে সে এই গাড়ে শহরে গিয়েছিল, তখনই কিছু খারাপ ছিল বলে সারাতে বলছিল চালক। তারপরেও সারানো নাহলে দূর্ঘটনার কবলে পড়া কি স্বাভাবিক ঘটনা নয়? – খারাপ বা অসুবিধাজনক গাড়ি বা যান না সারিয়ে রাস্তায় নামানো যান না হয় – বিষয়টিতে গুরুত্ব দিতে হবে। মাথায় রাখতে হবে – গাড়ি কিংবা মোবাইল খেলনা নয় এবং মানুষও পুতুল নয়।

            আর, গাড়ি চালানোর সময় চালক যেন কোনো মাধ্যমেই অন্যকারো সঙ্গে গল্প বা কথোপকথোনে না মাতেন। শিতের কুয়াশাচ্ছন্ন রাস্ত প্রয়োজন মতো দেখা না গেলে সে যাত্রা বাতিল বা বিলম্ব করা দরকার, রেলযাত্রার মতো। কারণ, জীবনের দাম অনেক বেশি।

Tuesday 24 April 2018

NIOS D.EL.ED. 2017-19 Trikes




 NIOS DELED COURSE CODE 505 ASSIGNMENT - I, II, III


NIOS DElEd SBA 511



পাস করতে কিসে কত পাওয়া আবশ্যিক? দেখেনিন -

পরীক্ষার তারিখ।

Thursday 8 March 2018

মাধ্যমিক সাজেশান – ২০১৮ || গণিত


আসন্ন পশ্চিমবঙ্গের মাধ্যমিক পরীক্ষায় ভালো ফলের জন্য শেষ মূহুর্তের গণিত সাজেশন - ২০১৮। নিচের লিঙ্কে গিয়ে ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে নিতে পারো/পারেন।


মাধ্যমিক গণিত শেষ মূহুর্তের সাজেশন ২০১৮ Download!

Thursday 11 January 2018

ধূমপান বিষপান

ধূমপান বিষপান
হামিম হোসেন মণ্ডল (বুলবুল)



          মানুষের এক সহজাত প্রবৃত্তি বা স্বভাব হল খারাপ জিনিসের প্রতি আসক্তি। সেই থেকে শুরু নেশাদ্রব্য গ্রহণ। আর নেশা জগতে অতিপরিচিত ও অতিসহজলভ্য নাম ধূমপান। ধূমপান শরীরের জন্য মারাত্বক ক্ষতিকারক। ধূমপান যে স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক সেকথা সিগারেটের প্যাকেটও জানান দেয়। মরণব্যাধি ফুসফুসে ক্যান্সারসহ শাস-প্রশ্বাস নালীর কঠিন ও জটিল অসুস্থতাসহ উচ্চ রক্তচাপের মতো কষ্টকর সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে কার্যত অবাঞ্ছিত ভাবে ধূমপায়ীদের আয়ু অনেকাংশে কমে যায়। আয়ু কমে যাওয়ার তুলনায় আক্রান্ত জটিল ব্যাধির পিড়া আরও ভয়ানক। সক্রিয় ভাবে ধূমপানে অংশগ্রহণ না করেও সক্রিয় ধূমপায়ীদের সিগারেট ও মুখ থেকে নির্গত নিষাক্ত ধোঁয়ার প্রভাবে পরোক্ষ ধূমপায়ী হয়ে শাসকষ্ট, শাসনালীতে প্রদাহ ও ফুসফুসে নানান কঠিন সমস্যা দেখা দিতে পারে।
          আমেরিকার প্রধান স্বাস্থ্য উপদেষ্টা তথা সার্জেন ডাক্তার রেগিনা বেনজামিন বলেন, সিগারেট, বিড়িতে টান দেওয়া মাত্রই শরীরের কেষগুলির উপর ধ্বংসাত্মক প্রতিক্রিয়া সংগঠিত হতে থাকে। যার ধারাবাহিকতার জেরে মরণরোগ ক্যান্সার দেখা দেয়। ধমনি রুদ্ধ হয়ে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। এভাবে দুনিয়াবাসীকে সতর্ক বার্তা দিয়ে তিনি আবারও জানান, প্রতিটি সুখটানেই (নিশ্চিত) শত শত বিষ রাসায়নিক পদার্থ ঢোকে শরীরে। ধূমপান বাহিত এইসব বিষ সুখটানের সঙ্গে সঙ্গেই রক্ত টেনে নেয় এবং বিষ সমস্ত দেহযন্ত্রে ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে সিগারেটের সৌজন্যে বিষ পদার্থ নিকোটিন অতি দ্রুত আত্মসাৎ করায়। রক্তের মধ্যে রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে, ফলে রক্ত আঠালো হয়ে জমাট বাঁধতে থাকে। ইতিমধ্যে সংকুচিত হয়ে থাকা ধমনি রক্ত জমাট বাঁধার কারণে অবরুদ্ধ হয়ে হার্ট অ্যাটাক হয় কিছু বুঝে ওঠার আগে। অনেকে ভাবেন বিড়ি বা সিগারেট টেনে এখনও তো খুব ভালো আছি, এটা আসলে ভুল ধারণা। আন্যদিকে কিন্তু প্রায় অধিকাংশ মানুষ (ধূমপায়ী ও অধূমপায়ী) জানেন বা মনে করেন ধূমপান আসলে বিষপান। তবুও কিন্তু এদের মধ্যে অনেকেই ধূমপান করে থাকেন। কিন্তু কেন? জাগে প্রশ্ন। এটাই তো আসক্তি, ঝোক, Addiction এর ফল, অর্থাৎ নেশা।
মানুষ নেশা করে কেন? আসলে কারা নেশা গ্রহন করে? তারা নেশাগ্রস্ত বা আসক্ত হয়ে পড়ে কখন? হতেপারে কোনো দিক দিয়ে পিছিয়ে পড়া, বঞ্চিত, লাঞ্ছিত, হতাশ, অসুস্থ, বেগার বা বেকার কিংবা লোভি ভোগবিলাশিতার কারণজানেন, লোভ কখনও চাহিদা পুরণ করতে দেয় না। ব্যক্তি জীবনে হতাশা, ব্যর্থতা, দুঃখ-কষ্ট, মানসিক যন্ত্রণা কম-বেশি লেগে থাকবেই; কিন্তু, সেগুলো যখন সীমা অতিক্রমণ করে চরমে পৌঁছোয়, যেখান থেকে সুস্থ সমাধানের মাধ্যমে শান্তি দূর-আশা তখনই অলীক সুখের মরীচিকা নিয়ে নেশার প্রাদুর্ভাব ঘটেহয়তো ব্যর্থতা, দুঃখ-কষ্ট ও যন্ত্রণার উৎস ব্যক্তিগত, পারিবারিক বা নিষ্ঠুর সামাজিক কিংবা অসামাজিক, অক্ষমতা, অবাঞ্ছিত কোনো অঘটনার ফল, চিন্তাগত বা অন্যকিছু। অথবা, মৌলিক, সামাজিক, ন্যায্য কোনো অধিকার থেকে বঞ্চনার শিকার অথবা অর্থনৈতিক অবক্ষয় যা নেশা গ্রহণ ও আসক্তির উল্লেখযোগ্য কারণ হতে পরে।
যাইহোক, দৈনিক ইনকিলাব (১৩-৪-২০১৬) সূত্রে, যারা ভাবছেন একবারই নাহয় ধূমপান করলাম তাদের উদ্যেশে ডাক্তার বেনজামিনের হুঁশিয়ারি, ওই একটি সিগারেটের বিপদ সম্পর্কে ৭০০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে দাখিল করেছেন আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ওবামা নিশুক্ত এই সার্জেন জেনারেল। রিপোর্টে উল্লেখ, পুয়েবলো, কলোরাতোতে নিষিদ্ধ হয় ২০০৩সালে। ঠিক তার ৩বছর পরে দেখা যায় হার্টের অসুস্থতার কারণে ৪১শতাংশ কমেছে রোগী ভর্তির সংখ্যা, হাসপাতালে। রিপোর্ট খতিয়ে দেখার পর নিকোটিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার কে মাইকেল কামিংস মন্তব্য করেন, ধূমপান তথা তামাকজাত যে কোনও নোশাই অবিলম্বে নিষিদ্ধ হওয়া উচিৎ। দেশের যত মানুষ হাসপাতালে সিকিৎসাধিন তার এক তৃতীয়াংশ ধূমপানজনিত ব্যাধির কবলে। রিপোর্টে উল্লেখ, গত বছর (২০১৫) আমেরিকায় যত লোক মারা যান তার মধ্যে প্রতি ৫জনে একজনের মৃত্যুর কারণ ধূমপানজনিত রোগ। আরও উল্লেখ, তামাকের ধোঁয়া সাত হাজারেরও বেশি রাসায়নিক এবং যৌগ ক্যানসার সৃষ্টিকারীসিগারেটের চেয়ে বিড়িতে কার্বন মনোক্সাইড এবং অন্যান্য বিষ যৌগ বেশি মাত্রায় থাকে। তাই বিড়ি বা সিগারেট ফুঁকেই মৃত্যুর হার বেশি।
বাংলাদেশে ৪৩শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক তামাকদ্রব্য ব্যবহার করেন। ফলে, যক্ষ্মা রোগে মৃত্যুর হারের নিরিখে বিশ্বে ষষ্ঠস্থান দখল করে দেশটি, যে রোগে দেশটিতে প্রায় ৭০ হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটে।
ধূমপান মাদকদ্রব্যের তুলনায় বেশি ক্ষতিকর। ধূমপানে কেবল ধূমপায়ীরাই ক্ষতিগ্রস্থ হয়না, বরং ধূমপায়ীদের সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবেশী ও বন্ধু-বান্ধবরা অর্থাৎ অধূমপায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
সিগারেটের উপাদান সমূহ।
তামাকের শুকনো পাতাকে গুড়ো করে তমাল, টেন্ডুপাতা এবং পাতলা কাগজে মুড়িয়ে বিড়ি, চুরুট বা সিগারেট প্রস্তুত করা হয়। এগুলো প্রজ্জ্বলিত করে বিভিন্ন প্রণালীতে শ্বাসনালী ও মুখগহ্বরে তামাকের ধোঁয়া প্রবেশ করানোর (বদ)অভ্যাস হল ধূমপান।
জাতিসংঘ রেডিও সূত্রে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-এর মতে, ২০৩০ সাল নাগাদ ধূমপানজনিত কারণে বার্ষিক মৃত্যুর হার আশি লাখে পৌঁছতে পারে। তামাকের উপর কর বাড়ানোর জন্য এবছর সংস্থা বিশ্বের সব রাষ্ট্রকে আহ্বান জানিয়েছে। বিশ্বব্যাপী সিগারেটের উপর পঞ্চাশ শতাংশ হারে কর বৃদ্ধি করা হলে ধূমপায়ীর সংখ্যা কমবে প্রায় ৪ কোটি ৯০ লাখ এবং ১ কোটি ১০ লাখ জীবন বাঁচবে। ধূমপান এতো মারাত্মক ক্ষতিকারক তবুও কেন তা তথা তামাকদ্রব্য একেবারে নিষিদ্ধ করা যাচ্ছে না?
তথ্য বলছে, পৃথিবীতে প্রায় ১ বিলিয়নের অধিক মানুষ ধূমপান করেন। পৃথিবীর প্রায় অর্ধেক শিশু বিষাক্ত নিকোটিনযুক্ত দুষিত বাতাসে শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণ করে। পৃথিবীর শতকরা ৮০ভাগ ধূমপায়ী নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশের বাসিন্দা। প্রতি ৬ সেকেণ্ডে ১টি মৃত্যুর জন্য ধূমপান কোনো না কোনো ভাবে দায়ী। বয়স্ক ১০টি মৃত্যুর ১টির সঙ্গে ধূমপানের সম্পৃক্ততা পারমাণিত।
নাইটসেড গোত্রভুক্ত একটি হার্ব হল তামাক, যা উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ-পশ্চিম আফ্রিকা, দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূল ভ্রমণ করে বর্তমানে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় চাষাবাদের উপযুক্ত ক্ষেত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
সাধারণত তামাক ও তামাকজাতদ্রব্য গুলোকে দুইভাগে ভাগ করা যায়। একটি- ধূমপানমুক্ত অর্থাৎ চিবিয়ে খেতে (সেবন) হয় বা নস্যি হিসেবে ব্যবহৃত তামাকষ অপরটি- ধোঁয়াযুক্ত অর্থাৎ ধূমপান, যেমন- বিড়ি, সিগারেট, হুক্কা, শিশা, পাইপ, ইত্যাদি।
এখনো অবধি সিগারেটে তথা তামাক পাতায় ১৯টি ক্যান্সারের উপাদান আবিষ্কৃত হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে নিকোটিন, পলিনিউক্লিয়ার এ্যারোমেটিক হাইড্রোকার্বন, এ্যাক্রোলিন, নাইট্রোসেমাইন, সায়ানাইড, তেজক্রিয় কারসিনোজেন যেমন- লিড-২১০, প্লামবাম-২১০, পলনিয়াম-২১০, রেডিয়াম-২২৬, রেডন-২২২ এবং বিসমাথ-২১০, ফর্মালডিহাইড, ইত্যাদি। নিকোটিন ব্যবহৃত হয় কিটনাশক প্রস্তুতে।
সামগ্রিকভাবে সিগারেটের মধ্যে ৬০০ রকমের ক্ষতিকর উপাদান উপস্থতির সম্ভাবনা রয়েছে। যার ধোঁয়া থেকে প্রায় ৭ হাজার ধরনের ক্ষতিকর রাসায়নিক উৎপন্ন হয়। প্রসঙ্গত, মাউন্টসিনাই স্কুল অব মেডিকেল ডেইলিকে বলেন, সিগারেটের মধ্যে এমন শত শত উপাদান থাকে যা তামাক গাছের মধ্যে থাকে নাএগুলো যখন পুড়তে থাকে তখন আরো নতুন নতুন রাসায়নিক দ্রব্য উৎপন্ন হয়। এরা স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ক্ষতি সাধন করে।
ধূমপানের ওপর সবচেয়ে বড় এবং দীর্ঘমেয়াদী গবেষণা হল ব্রিটিশ গবেষক রিচার্ড ডল সম্পাদিত। তাতে ৩৪৪৩৯জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, একটি অংশ ধূমপায়ী এবং বাকি অংশ অধূমপায়ীদের নিয়ে গবেষণা করেন ১৯৫১ থেকে ২০০১সাল অবধি। পর্যবেক্ষণে দেখাযায়, ধূমপায়ীরা অধূমপায়ীদের তুলনায় ১০বছর আগে মারা যান, ক্যান্সার, হৃদরোগ, স্টোকে। তারা দীর্ঘদিন শয্যাশায়ী থেকে মৃত্যুকে পরখ করেন। এছাড়াও ২০০৬সালে মার্চ মাসে স্কটল্যাণ্ডের উন্মুক্ত স্থানে ধূমপান নিষিদ্ধ করার ফলে আগের বছরের হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৭ শতাংশ কমে। এমনকি আধূমপায়ীদের মধ্যে আগের বছরের তুলনায় ৬৭ শতাংশ কমে। সুতরাং, বোঝাযাচ্ছে অধূমপায়ীরাও ধূমপানের শিকার ধূমপায়ীদের সৌজন্যে। আর, ধূমপান আসলে বিষপান।



[ তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট। ]

Friday 29 December 2017

উপর্জন ও অর্জিত সম্পদ হোক বৈধ, উপায় হোক সৎ ও হালাল


উপার্জন ও অর্জিত সম্পদ হোক বৈধ,
উপায় হোক সৎ এবং হালাল

কাজে ফাঁকি মারা মানুষ জাতির একটি সহজাত প্রবিত্তি হয়ে দেখা দিয়েছে। ‘ফাঁকি মারলে নিজেই সেই ফাঁকে পড়ে’ – এমন বিজ্ঞাপন আমরা দূরদর্শনে দেখেছি। কাজে ফাঁকি বা গাফিলতি দিয়ে পারিশ্রমীক নেওয়া হারাম যা গুনাহ্ বা পাপের পর্যায়ভুক্ত। লোকমুখে প্রচলিত আছে, কাজে ফাঁকি দিয়ে, অন্যকে ঠকিয়ে বা অন্যায় বা অবৈধ ভাবে আয় বা উপার্জন করলে বা সম্পদ করলে তা দীর্ঘস্থায়ী হয় না বা বেশিদিন টেকে না। বর্তমানে আধুনিক যুগে এই প্রচলিত ধ্যান ধারণার পরিবর্তন ঘটতে দেখা যাচ্ছে। হিংসার বসবর্তি হয়েই হোক বা আবেগে অথবা অধৈর্য হয়ে কিংবা আফশসের সুরে অনেককেই বলতে শোনা যাচ্ছে – কৈ! অনেকেইতো হাব্বিতাব্বি (বিপথে, আপথে, হারাম উপায়ে) মেরে অনেক উপার্জন করছে, আর দিব্বি আছে(ন) টিকে সুহালে। আসলে বর্তমান প্যাশনেবল মানুষ অর্থসর্বস্ব ও মর্ডান হয়ে পড়েছেন যে সাধারণ পাপ-পুর্ণের যথাযথ ইসলামিক জ্ঞানটুকুও সুপ্ত হতে শুরু করে দিয়েছে।

আরে ভাই, মানুষ ঠকিয়ে অন্যায় (হারাম) পথে উপার্জন করলে বা সম্পদ করলে তা টেকসই বা দীর্ঘস্থায়ী হোক বা না হোক – তাকি ইসলাম সমর্থন করে নাকি মানুষ বা রাষ্ট্রের আইন সমর্থিত? না। বরং ইসলাম ব্যক্তির হালাল রুজির কথা বলে, হারাম থেকে দূরে থাকতে ও তা বর্জন করতেই আদেশ দেয়। এখানে, হালাল বলতে কেবল বস্তু বা দ্রব্যের উপাদান সমূহ হালাল হলেই চলবে না, আমরা যার বিনিময়ে (পারিশ্রমিক ও সম্পদ) সে সব বস্তু বা দ্রব্যাদি সংগ্রহ করছি তাও হালাল হওয়া বাঞ্ছনীয়; একজন মুসলমানের নিকট তথা ইসলামে তা আবশ্যিক। ন্যায্য জিনিস ন্যায্য মূল্যের বিনিময় আবশ্যিক। অর্থাৎ, ব্যবহারিক বস্তু বা দ্রব্য ও তার প্রস্তুতকারী উপাদান যেমন হালাল হতে হবে তেমনি পারিশ্রমিক, উপার্জন, সম্পদ, বিনিময় মূল্য হালাল হতেই হবে এবং কেনাবেচা ন্যায্য (মূল্যে) ও বৈধ হওয়া বাঞ্ছনীয় ও আবশ্যিক।



কেউ চুরি করে বা মানুষ ঠকিয়ে কিংবা অন্যায় ভাবে উপার্জন করলে বা সম্পদ করলে সেই অর্থ ও সম্পদ দিয়ে পরবর্তিতে যা উপার্জন করবে বা তা থেকে যা আসবে বা কিনবে সবই হারামের পর্যায়ভুক্ত হবে না কি? একটু ভেবে দেখুন। আর সেই সম্পদ দীর্ঘস্থায়ী হলে জানতে হবে – এটাই তার দূর্ভাগ্য এবং আল্লাহ্-র গজব, বেতরাজি। বরং, অন্যায় উপার্জন বা হারাম সম্পদ দীর্ঘস্থায়ী না হলে, নষ্ট হলে – এটা তার সৌভাগ্য, যে পাপের বোঝা বা জমি তাকে বেশিদিন বহন করতে হবে না। ভালো কজের জন্য যেমন সোয়াব (ভালো ফল) পাওয়া যায়, তেমনি মন্দ কাজের জন্যও রয়েছে বিপরীতটি। একটি আম গাছ লাগালে যেমন যথদিন গাছটি থাকবে আম (ফল) দেবে, তেমনি বিচুটি বিছোলে ততদিন চুলকোবে। - এটাই স্বাভাবিক, সত্য।

তাই বলি, অন্ধের মতো অর্থসর্বস্ব উপার্জন ও সম্পদের সংগ্রহের দিকে না ছুটে সৎ, ন্যায় তথা হালাল উপার্জনে মননিবেশ ঘটান, সে স্বল্পই হোকনা কেন। মনে রাখবেন, মুসলমান হিসেবে আমাদের মূল উদ্দেশ্য ইসলাম পালন করা, আর তার জন্য প্রাথমিক ভাবে প্রয়োজন হালাল রুজি (উপার্জন, সম্পদ, সামগ্রি)। আপনি যতই রোজগার করুন না কেন, যতই সম্পদ করুন – তা হালাল বা সৎ, ন্যায় উপায়ে অর্জিত ও হালাল না হলে আপনি প্রকৃতপক্ষে হতভাগা ও দরিদ্র তথা নিচ। - নয় কি?
‘দেশের ৪ কোটি মুসলিমের ইসলাম সম্পর্কে ধারণা নেই, আক্ষেপ মাদানির’ (কলম, ১ নভেম্বর) – বিষয়টি প্রাসঙ্গিক, বাস্তবোচিত ও অধিক তাৎপর্যপূর্ণ। ‘শুধু নামেই মুসলিম। ইসলাম সম্পর্কে ন্যূনতম ধারণাটুকুও নেই।’ ‘মুসলিমদের এই অজ্ঞতা নিয়ে আক্ষেপপ্রকাশ করলেন জামিয়ত উলেমায়ে হিন্দের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মাহমুদ মাদানি।’ মাদানি যথার্থই সঠিক ও উচিৎ কথাই বলেছেন।

Click Here for More ... (দৈনিক কলম, অভিমত, ১৪/১১/২০১৭, 'প্রসঙ্গ : ইসলাম সম্পর্কে ধারণা')

Sunday 24 December 2017

মিড ডে মিল, বিদ্যালয় শিক্ষা ব্যবস্থা ও বাস্তবতা

দৈনিক কলম পত্রিকায় ৩০/০৮/২০১৫

মিড-ডে মিল অর্থাত্ দুপুরের খাবার, বর্তমানে স্কুলে স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের সাদরে আপ্পায়ণ করে চলেছে। তবুও অধিকাংশ ছেলে-মেয়ে দৈনিক দু'পাঁচ টাকা হাতে না-পেলে স্কুলে যেতে নারাজ হয়ে পড়ে। বাড়ির উদ্দ্যোগে টিফিন সরবরাহে অক্ষম - এমন পরিবার আজকাল তেমন নেই বললে ভুল কিছু বলা হবেনা। অনগ্রসর শ্রেণি ও দরিদ্র পরিবারগুলি সরকারি একাধিক প্রকল্পের সুবিধা ভোগী। একশো দিনের নিশ্চিত কাজ এবং দু'টাকা কিলো দরে চাউল-এর সুবাদে তাদের আর অনাহারে দিন-গুজরানোর কথা নয়। শ্রমিক মুজুরীও বেড়েছে। ফলে তারাও সন্তানের জন্য টিফিনের ব্যবস্থা করতে সক্ষম। অনেক পিতা-মাতা আবার স্কুলে দুপুরের খাবার সন্তানকে খেতে দিতে নারাজ থাকেন। অনেক পিতা-মাতা স্কুলের খাবার খেতে নিষেধ করেন তাঁদের সন্তানকে। পাছে ঐ খাবার খেয়ে অসুখ-বিসুখ না হয়ে পড়ে! এই ভয় দানা বেধেছে বেশ কিছু অভিভাবকের মনে। কারণ, নিকৃষ্টমানের খাবার খেয়ে, খাবারে বিষক্রিয়া ঘটে ছাত্রছাত্রী অসুস্থতার ঘটনা সংবাদপত্রের দৌলতে নতুন নয়। এমনকি মৃত্যুর মতো মর্মান্তিক দুর্ঘটনার খবর গণমাধ্যমে মেলে। কোথাও রান্না খাবারে মেলে ইদুর, টিকটিকি, আরশোলা, মাকোরশা। যখন এগুলো কোনো বড়সড় দুর্ঘটনার শামিল হয় তা সংবাদ মাধ্যমে চোখে পড়ে। ভেজাল তেল, পচা ডিম, পোকা চাউল; নানান অভিযোগ লেগেই রয়েছে ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের মুখে। তবে স্কুলে খাবার পেয়ে অন্দিত ছেলে-মেয়ে ও পরিবারও কিছছু রয়েছে বৈকি। কিন্তু এই মিড-ডে মিল খেতে গিয়ে বিষক্রিয়ায় হারাতে হয়েছে বেশ কিছু তরতাজা ফুটফুটে নিষ্পাপ শিশুর জীবন। পিতা-মাতা হারিয়েছেন তাঁদের অবলম্বন, ভবিষ্যত্, অমূল্য সম্পদ। কেউ কি পারবে ঐ শিশুদের তাদের মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিতে? প্রশ্ন হল - মিড-ডে মিলের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কী? বলার অপেক্ষা রাখেনা - আগের তুলনায় স্কুলছুটের সংখ্যা অনেকটা কমেছে। তবে সব ছাত্রছাত্রীদের স্কুলমুখী করতে এই অমৃত সুধার পরিকল্পনা তাদের শিক্ষার খোঁজ ক'জন রাখেন? পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ মামুন হোসেন জানান, 'মাসে ৪ বার জেলার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলিতে বিশেষ পরিদর্শক কমিটির সদস্যরা সারা বছর ধরে পরিদর্শন চালাবেন।' এতে জেলার বিদ্যালয়গুলিতে পঠনের মান বড়বে। (১৫/০১, কলম)। এই উদ্দোগের সাধুবাদ প্রাপ্য। আশঙ্কা জাগে - 'তোতা কাহিনী'র মতো অবস্হা হচ্ছে নাতো? মিড-ডে মিলের প্রভাবে স্কুলছুটের সংখ্যা অবশ্যই কমেছে - এটা যেমন সত্য; তেমনি এটাও সমভাবে মানে হবে - নানা কারণে ছাত্রছাত্রীদের উপর শিক্ষকদের প্রহার ও শাস্তি দানের বিরুদ্ধে আইন প্রণয়ন করে বন্ধ করা এবং অযাচিত ভাবে পড়াশোনার জন্য চাপাচাপি ও তাগিদ দেওয়ার প্রবণতা স্কুলগুলি থেকে আগের তুলনায় সভাবত অনেকটা কমে পড়া, স্কুলছুট হ্রাসের একটি অন্যতম কারণ। একসময় শিক্ষকদের নিষ্ঠুর শাস্তি ও বেত্রাঘাতের ভয়ে পড়া না-পেরে স্কুল ছাড়তে দেখাগেছে অনেক ছাত্রকে। ভুখা-পেটে পড়াশোনা না-ঢোকার ঘটনাও শামিল। নিয়মিত ফেল হয়ে স্কুল পরিত্যাগ করতে হয়েছে অল্প দিনে। তাই পাশফেল প্রথা তলানিতে ঠেকতে ফেল হয়ে স্কুল ছাড়তে হয়না আগের মতো। বদলেছে প্রশ্নপত্রের ধরণ, পরীক্ষা পদ্ধতি।
মিড-ডে মিলের সুবাদে দরিদ্র শ্রেণির কিছু মহিলা সনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে কাজ পেয়েছেন; রাধুনির কাজ। কিছু সবজি, মুদির দোকানে বেড়েছে কেনা-বেচা। স্কুলে দুপুরের খাবার থেকে অধিকাংশ রাধুনির সংগ্রহীত হয় একবেলার আহার, পরিবারও ফাঁক যায়না অনেক সময়। স্কুলে চাউল, ডাল, সবজি, সওয়া বড়ি, ডিম ইত্যাদি সামগ্রী যে উপস্হিত ছাত্রছাত্রীপিছু বরাদ্দ থাকে - সবার জানা। তবু রাধুনিরা দু'মুঠো খাবারের আশা করে তাদের বানানো খাবার থেকে। না জুটলে কটুকথা উপস্হিত শিক্ষক/সহায়িকদের কপালে ঠিক জুটে যায়। অবুঝ কিছু রাধুনি মানতে নারাজ। মিড-ডে মিল প্রকল্প সৎ থাকাকে নবএকপ্রকার চ্যালেঞ্জের সম্মুখে এনে দাঁড় করেছে। ভালো মানুষকেও চুরির রাস্তা দেখাচ্ছে এই অমৃত সুধা। রাধুনিদের আশা মেটাতে বা খরচের হিসাব মেলাতে চুরি-পন্থা ছাড়া উপায় থাকবে কি? মিড-ডে মিলে চাউল যেমন নির্দিষ্ট পরিমাণে ছাত্র/ছাত্রীপিছু বরাদ্দ থাকে, তেমনি জ্বালানি, তেল, সবজি, ডিম বাবদ একটি নির্দিষ্ট অংকের অর্থ বরাদ্দ থাকে উপস্হিত পড়ুয়াপিছু। কিন্তু বছরের সবসময় উক্ত সামগ্রীর দাম নির্দিষ্ট থাকে না। অথচ বছরের সবসময় মিড-ডে মিল মেনু ও বরাদ্দ অর্থ নির্দিষ্ট। তাই কখনো অর্থের ঘার্তি, সাশ্রয় দেখা দেয়। ফলে হিসাব মেলাতে এদিক ওদিক এর সাহায্য দরকার পড়ে। মিড-ডে মিলে বাজার করা, হিসাব রাখার দায়িত্ব রাধুনিদের হলেও অধিকাংশ রাধুনি লেখাপড়া না জানার কারণে হিসাব রাখতে অসামর্থ্য হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বটি পারিশ্রমিকহীন অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে কাঁধে নিতে হয় স্কুলের কোনো এক সহশিক্ষক/সহায়িকাকে। পড়ানো ছাড়া শিক্ষকদের আরো অনেক কাজ থেকে থাকে। প্রস্তুতিকালীন মূল্যায়নের খাতা সারা, পরীক্ষা নেওয়া ও খাতা দেখা, অন্যান্য কাজ, কারো কারো দায়িত্বে আছে ভোটের ডিও, বিএলও-এর আর্জেন্ট কাজ। ফলে এসব সামাল দিয়ে দৈনন্দিন বাজারের হিসাব রাখার দায়িত্ব সামাল দিতে স্কুলে পড়াশোনার কিছুটা হলেও ব্যঘাত ঘটার সম্ভাবনা প্রবল। দৈনিক পড়াশোনার এই ঘার্তি বছর শেষে বড় ক্ষামতিতে পরিণত হয়। ফলতঃ শিক্ষার্থীরা বার্ষিক মূল্যায়নে গণটোকাটুকিতে শামিল হয়; নতুবা মার্কশিটে নম্বরের ভাটা, খরা নামে। অন্যদিকে, বিনা পারিশ্রমিকে দৈনিক অতিরিক্ত ঝামেলা বয়েবেরাবেন কেন একজন শিক্ষক/সহায়িকা? তিনি কি সবজির ব্যবসা শুরু করবেন লাভের আশায়? একজন শিক্ষকের পক্ষে তা করা নেহাত স্বপ্ন। তবু বেকার খেটে মিলবে কটুকথা ও চোর অপবাদ। মিড-ডে মিলে গাফিলতির দায়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক গেরেফতারের ঘটনা গণমাধ্যমে মিলছে। দোকানদারও। ফলে কলঙ্কিত হচ্ছে শিক্ষক সমাজ ও শিক্ষাক্ষেত্র। অনেক শিক্ষকের মিড-ডে মিলে অনাগ্রহ তাঁদের অভিমত-এই প্রকাশ পায়। মিড-ডে মিল চালানোর অর্থ পাওয়া যায় অগ্রিম খরচ চালিয়ে হিসাব পাঠিয়ে। খরচ চালানোর এই অগ্রিম অর্থের পরিমাণ নেহাত কম নয়। দরিদ্র সংসার চালিয়ে এই অগ্রিম অর্থ গুনে টাকা ঝুলিয়ে রাখার সামর্থ্য রাধুনিদের থাকে না। ফলে বাধ্য হয়ে কোনো এক শিক্ষককে দায়িত্ব নিতে হয়। প্রাথমিক, এসএসকে, এমএসকের শিক্ষককে কোথাও ছাত্রদের সবজি দোকানে দেখা মেলে। মিড-ডে মিলের বাজার করা ও হিসাব রাখার উপযুক্ত একটি লোক রাধুনির দলে থাকলে এই সমস্যার সমাধান মিলবে। স্কুলে­ দুপুরের খাবার খাওয়ার পরে অধিকাংশ বাচ্চা বাড়িমুখী হয়ে পড়ে। বাড়ি সংলগ্ন স্কুল হওয়ার সুবাদে কিছু ছাত্রছাত্রী ভাত নিয়ে থালা হাতে বাড়ির দিকে রওনা দেয়। বাকি প্রিয়োডগুলো কাটে মনযোগহীন ও কম পড়ুয়াতে। সব কাজের ফাঁকে একটু বিরতি প্রয়োজনীয়। পড়াশোনার ক্ষেত্রেও। স্কুলে টিফিন প্রিয়োডটুকু ছাত্রছাত্রীরা বিরতিরুপে সময় কাটিয়ে থাকে। কিন্তু মিড-ডে মিলের দৌলতে এই সময়টুকুও বিরাম থাকল না; দৈনিক থালা হাতে খেতে-ই ব্যস্ত থাকতে হয়। 'দুপুর বেলায় খাওয়ার পরে ঘুমাতে ইচ্ছে করে' - এই বঙ্গসন্তানের খাওয়ার পরে কতটা মনযোগ থাকছে তা পরিদর্শনের বিষয়। বর্তমান­ে সরকারি প্রাথমিক স্কুলগুলির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আনাচে কানাচে গজে উঠছে বেসরকারি মিশনারী, নার্সারিগুলি। সেখানে নেই দুপুরের খাবারের ব্যবস্হা, ননেই সরকারি সুযোগ সুবিধা। বরং মাসিক ফিতে পড়াতে হয় সন্তানকে। তবু নার্সারিগুলি ছাত্রছাত্রীতে পরিপূর্ণ থাকে। এর কারণ কী? অভিভাবকরা চায় সন্তানের শিক্ষা। প্রশ্ন ওঠে - সরকারি স্কুলে কি শিক্ষা দান হয়না? যাইহোক,­ বহু চেষ্টা ও পরিশ্রমের ফলে দেশের প্রতিটি সরকারি বিদ্যালয়ে উপস্থিত পড়ুয়াদের দুপুরে খাবার দেওয়া সম্ভব হয়েছে। এটা ভারতের একটি বড় সাফল্য। এমন দিনও গেছে - রাজ্যে তথা দেশে বহু ছাত্রছাত্রী কেবল ক্ষুধার জ্বালায় স্কুল ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। সেখান থেকে উৎপত্তি 'শিশু শ্রমিক'-এর। বেড়েছে শিশু শ্রম। বাচ্চাদের ক্ষুধার জ্বালাকে কুকাজে লাগিয়ে এক শ্রেণির দয়ালু মুখোশধারি নির্দয় ব্যক্তি তাদের বানিয়েছে 'শিশু শ্রমিক'। যে শিশু শ্রম এখনো সামাজিক ব্যধিরুপে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে মানবতাকে। এখনো এদের দেখা মেলে ইটভাঁটা, হোটেল, দোকন, পরিবহন শিল্পে। মিড-ডে মিলও এদের শ্রমের কাছে হার মানছে। তাই এদের স্কুলমুখী করতে চাই 'শিশু শ্রমিক' নির্মূল অভিযান ও যথার্থ বাস্তবায়ণ। এখনো­ কিছু কিছু ছাত্রছাত্রীর অবশ্যই মিড-ডে মিলের প্রয়োজন আছে। কিন্তু সব ছাত্রছাত্রীর প্রয়োজন রয়েছে কি? অথচ একই স্কুলে কিছু ছেলেমেয়ে দুপুরে খাবার খাবে আর কিছু ছেলেমেয়ে পাবে না - তাও অবাঞ্ছিত ও দৃষ্টিকটু বিষয়। এক্ষেত্রে অনগ্রসর এলাকা ভিত্তিক স্কুল চিহ্নিত করে প্রয়োজন সাপেক্ষে মিড-ডে মিলের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। দরিদ্র পরিবারের আর্থিক উন্নয়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করা যেতে পারে।
(দৈনিক কলম পত্রিকায় ৩০/০৮/২০১৫-এ প্রকাশিত একটি নিবন্ধ)

Friday 22 December 2017

আধুনিক কবিতা মানুষের হৃদয়ের কথা বলে


আধুনিক কবিতা মানুষের হৃদয়ের কথা বলে

কলম-এ ১১ জুন ‘কলম সাহিত্য’ পাতায় পড়লাম ‘ছন্দই কবিতার প্রাণ, ছন্দময়তাই গতি’।
এখানে লেখক কুতুবউদ্দিন বিশ্বাস লেখেন, ‘ছন্দ ও সৌন্দর্য যেন একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ।’ কিন্তু সাধারণত আমরা একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ বলতে বুঝি – হয় এপিঠ, নয়তো ওপিঠ। এপিঠ ওপিঠের বিপরীত, একপিঠ অন্যপিঠের বিপরীত। অর্থাৎ দুটি ঘটনা পরস্পরের বিপরীত। একটি ঘটলে অপরটি ঘটবে না। অর্থাৎ দুটি ঘটনা একসঙ্গে ঘটতে পারে না। অথচ তিনি এই উপমা যোগে বোঝাতে চেয়েছেন, - ‘পারস্পরিক সম্পর্ক যুক্ত দুই সহোদর।’ এখানে আসলে দুটি পরস্পর বিপরীত সম্পর্ক যুক্ত হয়ে পড়েছে। তিনি বোঝাতে গিয়েছেন – ‘ছন্দের গর্ভে সৌন্দর্য ও সৌন্দর্যের গর্ভে ছন্দ লুকায়িত।’ তাঁর কথায় – ‘ছন্দ মানুষের মনকে শান দেয়, সৌন্দর্য মানুষের চোখে আকর্ষিত হয়।’ প্রকৃতপক্ষে, ছন্দ সুপাঠ্য করে তোলে এবং মনকে পুলকিত করে দেয়। তিনি মনে করেন – ‘ছন্দ ও সৌন্দর্য যখন মানুষের হৃদয় গভীরে নাড়া দেয়, তকন তা কবিতার জন্ম হতে পারে।’ প্রকৃতপক্ষে কবিতার জন্ম হয় – হৃদয় মাঝারে বাস্তব অভিজ্ঞতা ও জীবনানুভূতি যথাযথ নাড়া দিলে। তাহ্ তাল, মাত্রা, লয়, ছন্দে, শব্দের বন্ধনে, ভাষার মাধূর্যে প্রকাশিত হয় কবিতা। কবিতায় ভাবার্থ থাকে, গভীর থেকে গভীরে, অন্তরে। কেবল ছন্দ হলেই তো তা আর কবিতা হয় না! হয়ে যায় ছড়া; যা শিশু-কিশোর পাঠ্য, দৈনিক কলম-এর ‘সবুজপাতা’, তাতেও মোড়াল থাকে, তবে তা আধূনিক কবিতার মতো গভীরার্থ নয়। ছন্দ বলতে কেবল শব্দের মিল কিংবা শব্দের অন্তমিলকেই বোঝায় না। গদ্য কবিতা ও আধূনিক কবিতার মধ্যেও ছন্দ রয়েছে। গদ্য কবিতা ও আধূনিক কবিতা ভাবার্থের গভীরে, ছন্দের জালে এবং শব্দের মাধূর্যে বুননো। তাই হয়তো অনেক সময় বাক্য সারল্য মনেও আধুনিক কবিতা ছন্দে, ভাবার্থে বড্ড জটিল কিংবা/ও গভীর। তাই অনেকেরই তা যথাযথ বুঝতে অসুবিধা হয়। এপ্রসঙ্গে আমজাদ আলি হালসানার অভিমত (কলম, ৩০ জুন) – ‘আধুনিক কবিতা বেসুরো নয়, সেখানেও ছন্দ থাকে’ – যথাযথ ও যথার্থ। ‘আসলে ছন্দ যে কী সেটাই কুতুবউদ্দীন বিশ্বাস বুঝে উঠতে পারেননি।’ আধুনিক কবিতার মধ্যে রয়েছে নির্ভেজাল ছন্দ এবং গভীর ভাবার্থ, আর হৃদয়স্পর্শী অনুভূতি। বুদ্ধদেব বসু (অজীর্ণ রোগে শীর্ণ, মগজ / পক্ষপাতী পাটিগণিত ঠাসা;), অরুণ মিত্র (দুব্বার কয়েকটা ছোপ / ধানের গুচ্ছের একটু ছটা), দিনেশ দাস (বেরনেট হোক যত ধারালো- / কাস্তেটা ধার দিয়ো বন্ধু!), সুভাষ মুখোপাধ্যায় (মিছিলে দেখেছিলাম একটি মুখ, / মুষ্ঠিবদ্ধ একটি শাণিত হাত / আকাশের দিকে নিক্ষিপ্ত;), বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (একবার মাটির দিকে তাকাও / একবার মানুষের দিকে।)-রা আধুনিক কবিতা লিখে জনপ্রিয়তার উপরে অবস্থান করছেন এবং বিখ্যাত হয়েছেন। এঁরা শব্দমিল বা শব্দের অন্তমিল ছন্দের বাইরে থুড়ি উর্ধে গিয়ে বক্তব্য ও অনুভূতির সমুদ্র গহ্বরে গিয়ে মানুষের হৃদয়ে গাঁথতে সক্ষম হয়েছেন। তাঁদের রচিত যথার্থ আধুনিক কবিতার বলে। নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী লিখলেন – ‘সবাই দেখছে যে, রাজা উলঙ্গ / তবুও সবাই হাততালি দিচ্ছে।’ এই সারল্য সাধারণ বাক্যে তিনি ‘উলঙ্গ রাজা’ কবিতা সাজিয়েছেন, যার ভাবার্থ অসাধারণ। এটি তাঁর একটি অনন্য ও পুরস্কৃত কবিতা তথা কাব্যগ্রন্থ। এরপর তিনি বিখ্যাত। এই বিষয়গুলি হয়তো কুতুবউদ্দিন সাহেবের জানা নেই। আধুনিক কবিতা মানুষের হৃদয়ের কথা বলে তার নিজ্ ছন্দে।