Followers

Monday 8 July 2013

আল্লাহ্ কারও চেয়ে অন্য কাউকে সম্মানীত করে থাকেন।

এক সময় মুসা আঃ তাঁর অনুগামীদের দ্বারা তাঁর জ্ঞানের গভীরতার জন্য খুব প্রশংসিত হন। ফলে মুসা আঃ নিজে নিজে খুব গর্ববোধ করতে লাগলেন। মহান আল্লাহ্ তলা বুঝতে পেরে মুসা আঃ কে খেজের আঃ এর কাছে গিয়ে তাঁর জ্ঞানের পরিধি তুলনা করতে বললেন। খেজের আলাইহেস সাল্লাম ছিলেন একজন নবী, যিনি ছিলেন অত্যন্ত জ্ঞানী অর্থাত্ মহাজ্ঞানী। সেই মতো সঙ্গী ইউসাকে নিয়ে মুসা আঃ নবী বেরিয়ে পড়লেন খেজের আঃ এর সন্ধানে। বহুদূর পথ চলে এক তেমাথার মোড়ে এসে বিশ্রাম নিলেন। ভাবতে লাগলেন কোথায় খেজের আঃ এর সাক্ষাত পাওয়া যাবে। আবার পথ চলা শুরু করলেন। কিছু দূর যেতেই ক্ষিদে পেল। মনে পড়ল ওটি তিনি ঐ তেমাথার মোড়ে ভুলবসত ছেড়ে এসেছেন। কিন্তু ক্ষিদেতো আর বাগ মানতে চায় না। তাই ফিরে গেলেন ঐ তেমাথার মোড়ে পুটলিটির সন্ধানে। গিয়ে দেখলেন ভাজা মাছটা জীবন্ত হয়ে গেছে আর পাশের জলভর্তি নালাতে খেলা করে বেড়াচ্ছে। চতুর্দিকে তাকাতেই দেখতে পেলেন কিছু দূরে এক ব্যক্তিকে নামাজরত অবস্থায়। মুসা এগিয়ে গেলেন।নাজাম শেষে জানতে পারলেন তিনিই খেজের আঃ। মুসা সাক্ষাতের কারণ জানালেন। খেজের বললেন : তুমি অধৈর্য্যশীল ব্যক্তি। আমার সঙ্গে থেকে জ্ঞান অর্জন করতে পারবে না। শেষপর্যন্ত নাছোড় মুসার অনুরোধে তাঁকে শপথ করালেন যে যতক্ষণ না পর্যন্ত তিনি নিজে থেকে কোনো ঘটনার তাত্পর্য ব্যাখ্যা না করবেনততক্ষণ তাঁকে নিশ্চুপ নীরব থাকতে হবে; নাহলে সঙ্গ ছাড়তে হবে। মুসা তাতেই রাজী হয়ে গেলেন। শুরু হল এক সঙ্গে পথ চলা। সামনে নদী। পার হতে হবে। কুলে বাঁধা থাক একটি ডিঙ্গীতে চড়ে দু'জনে পার হলেন। এবার খেজের আঃ ডিঙ্গীটি ছিদ্র করে ছেড়ে দিলেন। আবার চলে শুরু করলের দুজনে। এসে পৌঁছলেন একটি গ্রামে। সেখানে বহু বালককে খেলতে দেখলেন। খেজের আঃ ওদের একজনকে পাকড়াও করে এক নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে তাকে হত্যা করলেন। হৃদয়বান মুসা আঃ এই দৃর্শ্য সহ্য করতে পারছেন না। তিনি অধিক পঞ্চল হয়ে পড়লেন। দুজনে আবার এগিয়ে চললেন। এইমাত্র সন্ধ্যা নামল। তাঁরা এক গৃহস্থের বাড়ীতে আহারের জন্য কিছু খাবার চাইলেন। দুই অভুক্ত মুসাফিরকে পেয়েও বাড়ীর মালিকের হৃদয় বিন্দুমাত্রও গললো না, সে নিরাশ করে ফিরিয়ে দিল। খেজেরের আঃ নজরে পড়ল ঐ মালিকের বাড়ী লাগোয়া একটা জড়াজীর্ণ প্রাচীর বেশ হেলে রয়েছে, যখনতখন পড়ে যেতে পারে। তিনি আঃ হাত বুলিয়ে সেটাকে খাড়া করে দিলেন। এসের তাত্পর্য মুসার আঃ বিন্দুমাত্র বোধগম্য হল না।তিনি আঃ অধৈর্য্য হয়ে পড়লেন এবং খেজের আঃ কে নানা অছিলায় অন্যভাবে প্রশ্ন করে উত্তর জানতে অতি আগ্রহ প্রকাশ করেন। খেজের আঃ বল্লেন, নৌকাটা না ফুটো করলে জালেম বাদশাহ সেটা বাজেয়াপ্ত করে নিজের কবজা করত। ফলে মালিক ক্ষতিগ্রস্ত হত। বালকটির লক্ষণ দেখে বুঝেছি ও বয়ঃপ্রাপ্ত হয়ে পথভ্রষ্ট ও জালেম হবে। ফলে মাতা পিতাকে কষ্ট দেবে ও সমজকে নোংরা করবে। আরঐ দেওয়ালটি! তার নীচে এক অনাথ বালকের সম্পদ পোঁতা রয়েছে। ওটি পড়ে গেলে স্বার্থপর মালিত ওই রক্ষিত সম্পদ সম্পূর্ণ আত্মসাত্ করত। তাই এতিমের কথা ভেবে ওটি সোজা করে দিলাম। বড় হয়ে সে তার প্রাপ্য পেয়ে যাবে। মুসা আঃ খেজেরের আঃ জ্ঞানের গভীরতায় খুবই আবাক এবং মুগ্ধ হয়ে গেলেন। খেজের আঃ মুসাকে আঃ বললেন : হে পয়গম্বর! আপনার ভুল ধারণাছিল যে আপনার অপেক্ষ কেউ এই পৃথিবীতে জ্ঞানী ব্যক্তি নেই। আল্লাহ্ কারও চেয়ে অন্য কাউকে সম্মানীত করে থাকেন। এই বলে তিনি আঃ মুহুর্তেই অদৃশ্য হয়ে গেলেন। 
 — হামিম হোসেন মণ্ডল (বুলবুল)

No comments:

Post a Comment